পরীক্ষায় ভালো ফল আত্মবিশ্বাস বাড়ায়

 




যেকোনো পরীক্ষায় ভালো ফল অর্জনই একজন শিক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, নিজেকে সাহসী করে তোলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ফলও এর ব্যতিক্রম নয়। আমি নিজে পড়াশোনা করেছি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে। অনুষদের সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছি প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক। যাঁরা একাডেমিক ফল ভালো করতে চান, তাঁদের জন্য আমার অভিজ্ঞতালব্ধ কিছু পরামর্শ নিয়ে লিখছি।


আগ্রহ থাকতে হবে

একাডেমিক রেজাল্ট ভালো করার পূর্বশর্ত এবং অন্যতম শর্ত হচ্ছে আগ্রহ। একজন শিক্ষার্থীকে ওই রকম পর্যায়ের আগ্রহী হতে হবে, যে আগ্রহ হলে তিনি বুঝতে পারবেন তাঁর একাডেমিক ফল ভালো হবে। একাডেমিক ফল ভালো করার আগ্রহ সৃষ্টি হলে সেই অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত করতে পারবেন। একই সঙ্গে ভালো সিজিপিএ অর্জন করলে কী কী সুযোগ-সুবিধা তিনি পাবেন, সেটা সম্পর্কেও সম্যক ধারণা থাকা জরুরি। বিশেষ করে যাঁরা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী, তাঁদের জন্য এ বিষয়গুলো অনুধাবন করতে পারলে তুলনামূলকভাবে ফলাফল ভালো করা সম্ভব হবে।

নিয়মিত ক্লাস করতে হবে

একজন শিক্ষার্থী যদি ভালো ফল করতে চান, তবে তাঁকে নিয়মিত ক্লাস করতে হবে। আমি নিজেও কখনো ক্লাসে অনুপস্থিত থাকতাম না। একান্ত অপারগ না হলে ক্লাসে অনুপস্থিত থাকা যাবে না। ক্লাসে শিক্ষক যে বিষয়ে পড়াচ্ছেন, সেই বিষয় নির্ধারণ করে, সেই অনুযায়ী সবিস্তারে ও নিয়মিতভাবে পড়াশোনা করতে। নিয়মিত ক্লাস করলে তিনি পূর্ণাঙ্গ ধারণা পাবেন—কীভাবে পড়াশোনা করলে, কোন পদ্ধতিতে পড়াশোনা করলে, কতটা পড়লে তিনি ভালো ফল করতে পারবেন। ক্ষেত্রবিশেষে সবার সক্ষমতা আলাদা। প্রত্যেকের নিজ নিজ সক্ষমতা অনুযায়ী সর্বোচ্চ পড়াশোনা করতে হবে।

থাকতে হবে আপ-টু-ডেট

শুধু ক্লাসে পড়াশোনা করেই ভালো সিজিপিএ অর্জন করা সম্ভব নয়। পরীক্ষার খাতায় বাস্তব জীবন থেকে উদাহরণ, আপ-টু-ডেট তথ্য দিতে হবে। যখন আপনি পরীক্ষার খাতায় বিষয়টা লিখবেন, তখন এটাও আপনাকে মাথায় রাখতে হবে যে তাত্ত্বিকভাবে আমি যা পড়েছি, সেটার বাস্তবিক কোনো প্রয়োগ বা প্রভাব রয়েছে কি না। ওই বিষয়গুলো যখন খাতায় প্রশ্নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে লিখতে পারবেন, তুলে ধরতে পারবেন, তখন নিঃসন্দেহে আপনার খাতাটা অন্য সবার চেয়ে আলাদা হবে। একজন পরীক্ষক বিষয়গুলো দেখে সন্তুষ্ট  হবেন। এ জন্য একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি আপ-টু-ডেট থাকার জন্য পত্রিকা পড়তে হবে; জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়াদি সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। কখনোই ক্লাস নোট বা একটা বই, কোনো টপিকের জন্য পর্যাপ্ত না, বিভিন্ন বই, ওয়েবসাইট, রিসার্চ জার্নাল, রিসার্চ আর্টিকেল, পত্রিকাসহ যথাযথ উৎস থেকে তথ্যগত সহায়তা নেওয়া যেতে পারে। উইকিপিডিয়ার মতো সাইটগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন, রিসার্চ মনোগ্রাফ, থিসিস, ইন্টার্নশিপের ক্ষেত্রে এটা আপনাকে এগিয়ে রাখবে। 

ইন্টারনাল মার্কস ভালো রাখতে হবে

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাপটে ইন্টারনাল মার্কস খুব গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের কোনো সাবজেক্টে যদি ৪০ নম্বর ইন্টারনাল মার্কস থাকে, ইন্টারনালে ভালো পারফর্ম করলে ৩৫ পাওয়া যাবে, যা শিক্ষার্থীকে অনেকটাই এগিয়ে রাখবে। এ জন্য সব সময়ই ইন্টারনাল মার্কস যেন ভালো থাকে, সে জন্য পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিতে হবে।

পরীক্ষার খাতায় ভালো উপস্থাপন

কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থীর মধ্যে লক্ষ করা যায়, ভালো প্রস্তুতি বা ভালো পড়াশোনা থাকা সত্ত্বেও তারা পরীক্ষার খাতায় ভালো লিখতে পারেন না। আবার অনেকে তুলনামূলক কম পড়াশোনা করেও সঠিকভাবে উপস্থাপনের কারণে ভালো ফল করেন। এ জন্য পরীক্ষার হলে মাথা ঠান্ডা রেখে সেরা বিকল্পটি নির্বাচন করতে হবে। গতানুগতিক প্রশ্নের উত্তর না লিখে মার্কস অনুযায়ী সর্বোচ্চ মানসম্মত লেখার চেষ্টা করতে হবে, কিছু গ্রাফিক্যাল প্রেজেন্টেশন নিয়ে আসতে হবে। হাতের লেখা খারাপ হলেই যে সব শেষ, বিষয়টা এমনও না। মূল কথা হচ্ছে, পরীক্ষার খাতায় লেখাগুলো যেন স্পষ্ট থাকে, সঠিক জায়গাগুলোতে মনোযোগ দিতে হবে। পত্রিকার লিংক

অনুলিখন: মো. আশিকুর রহমান


No comments

Theme images by Deejpilot. Powered by Blogger.